বনলতা সেন এর আত্মকথা
অতনু সরকার
আমি বনলতা সেন
নাটোরের বনলতা সেন।
আমার জন্ম, শৈশব, বেড়ে ওঠা
সবই নাটোরের অজানা অচেনা গ্রামে।
গ্রামের নাম এখন বনলতা সেন,
নাটোরের পরিচয় ও বনলতা সেন।
কবি আমাকে আবিষ্কার করেছেন তার
মরমী মনের আপন মহিমায়।
আমাকে প্রতিষ্ঠিত দিয়েছেন বিশ্বের মাঝে।
শ্রাবস্তীর সৌন্দর্যের মত আমার
সৌন্দর্য কিনা আমি জানিনা।
বিদিশার অন্ধকারের মত আমার
ঘন কালো চুল কিনা তাও জানিনা।
শুধু এটুকু জানি জীবনের আবর্তে
বহু পথ ঘুরে কবির সামনে দাঁড়িয়ে
ছিলাম এক মায়াবী রাতে।
আপনারা হয়তো ভাবছেন আমি নষ্ট মেয়ে।
আপনারা হয়তো ভাববেন আমি খারাপ মেয়ে।
কিন্তু বিশ্বাস করুন আমি বনলতা সেন
সৌন্দর্যের ডালি আর স্নেহ মায়া মমতা নিয়ে
আপনাদের মতই রক্তমাংসে গড়া এক মানুষ।
জীবনের ঘূর্ণাবর্তে হঠাৎই দেখা জীবন কবির সাথে।
আমি নষ্ট মেয়ে নই, কিন্তু জানিনা
কোন অমোঘ টানে বারবার ছুটে
গিয়েছি রাতের অন্ধকারে কবির কাছে
শুধু মুখোমুখি দাঁড়াবার জন্য।
নিবিড় অন্ধকারের নিরবতায়
হারিয়ে গেছি দুজন।
হারিয়ে গেছি দুজন।
কবি কে আমার ভালো লাগতো।
তাই আপন মনের মাধুরী মিশিয়ে
প্রতিটা রাত কবিকে মুগ্ধ করেছি।
কবি জীবনের অন্ধকার গুলোকে
দূর করার চেষ্টা করেছি আমি।
হয়তো তাই একের পর এক কবিতা
সৃষ্টি হয়েছে কবির কলমে।
আমি বনলতা সেন।
আমার নাম শুনেছ তোমরা
আমাকে দেখনি কেউ।
সাগরের দুরন্ত ঢেউয়ের মতো আমার যৌবন,
নদীর স্রোতের মতো আমার কলতান হাসি।
গঙ্গার মত চির যৌবনা
আমি নাটোরের বনলতা সেন।
আমার চোখে চোখ রেখে হারিয়ে
যেতে পারত যে কোন পুরুষ।
কিন্তু আমি কবি কে করেছি আপন
কবির কবিতায় বেঁচে থাকতে চেয়েছি
যুগের পর যুগ, বছরের পর বছর।
সবাই জানবে আমি শ্রাবস্তীর
সৌন্দর্যের মতো কারুকার্য করা
প্রাচীন সুন্দরী নারী।
দেব দেবীদের মতো আমিও চিরযৌবনা
কারণ আমি নাটোরের বনলতা সেন।

0 মন্তব্যসমূহ